ইয়ানূর রহমান : আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৪ বছরে শার্শায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়নের রুপকারের নায়ক হলেন ৮৫ যশোর-১ (শার্শা) আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন। যশোর জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে ভৌগলিক ও রাজনৈতিকসহ নানাভাবে আলোচিত শার্শা উপজেলা। ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত শার্শা উপজেলা।
স্বাধীনতার পর থেকে এ উপজেলা ছিলো উন্নয়ন বঞ্চিত। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে শেখ আফিল উদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারপর থেকে শেখ আফিল উদ্দিন এমপি এলাকায় যে চমক দেখিয়েছেন স্বাধীনতার পর এত বছরেও উন্নয়ন চোখে পড়ার মত ছিল না। যার প্রমাণ স্বরুপ উপজেলার ভূতুড়ে পল্লীর ছোট ছোট বাড়িগুলো পর্যন্ত এখন সন্ধ্যার পর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত থাকে। যেখানে একসময় সন্ধ্যা নামলেই হারিকেন বা ল্যাম্প জ্বালিয়ে রাত্রি কাটাতে হতো। এক সময়ের এই অবহেলিত উপজেলাকে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে দিয়েছেন শেখ আফিল উদ্দিন এমপি। যা সমাজে সমালোচনার ভীড়েও একথা স্বীকার করেন এ অঞ্চলের বিরোধী নেতা-কর্মীরা। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়ক ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে এলাকার জনপদ। এ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দেখে মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে এক অনাবিল আনন্দ।
এখানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগুলোকে করেছেন শিক্ষার পরিবেশ বান্ধব সহ বহুতল ভবনে নির্মাণ। উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে গড়ে তুলেছেন আধুনিক ও দৃষ্টিন্দন উপজেলা প্রশাসনিক ভবন, উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন, আবাসিক ডর্মেটরি নির্মাণ, আধুনিক ডাক বাংলো, উপজেলা মৎস্য ভবন ও শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। নির্মাণ করেছেন উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়াম, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, বেনাপোল পোর্ট থানা ভবন নির্মানাধীন, বাগআঁচড়া পুলিশ তদন কেন্দ্র ভবন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ।
গত ১১ বছরে তিনি এলাকার উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূূচি হাতে নেন। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা মুক্তি যোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৪টি পাকা বাড়ি নির্মান। ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ’র মাজার সংস্কারকরণ, ৫লক্ষ টাকা ব্যয়ে জামতলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর সংস্করণ, ৭লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাগজপুকুর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর সংস্করণ, ৪তলা বিশিষ্ঠ শার্শা উপজেলা কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজ নির্মাণ ও সরকারিকরণ, পাকশি আইডিয়াল কলেজ, বেনাপোল ডিগ্রী কলেজ, গোগা ইউনাইটেড কলেজ, নাভারন ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজ, লক্ষনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেরালখালী-পাড়ীয়ার ঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধান্যখোলা মাদ্রাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাতিপাড়া মাদ্রাসা, নাভারন ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজ, শিকারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কায়বা-বাইকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এছাড়া শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা ও ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মান। যা থেকে দুটি উপজেলার মানুষ সকল সুবিধা ভোগ করছেন।
সরকারিকরণ করেছেন শার্শা পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এছাড়া ৪ তলা বিশিষ্ট সামটা মাদ্রাসা, বসতপুর মহিলা মাদ্রাসা, আমলাই মহিলা মাদ্রাসা ও টেংরা মহিলা মাদ্রাসা। বেনাপোল পৌরসভা ১ম শ্রেনীতে উন্নীত করন করেছেন। বেনাপোল আন্তজাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল, বেনাপোল বাইপাস সড়ক, শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়াম, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, ৯৭ শতাংশ বিদ্যুৎ, রাস্তা, ব্রিজ, কার্লভাট ইত্যাদি।
নির্মানাধীন রয়েছে শার্শা সদরে বহুতল বিশিষ্ঠ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বেনাপোল বড় মসজিদ। সংস্কার করেছেন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক’শ মসজিদ। জমি ও ঘর নেই এধরণের ১৮৮ জনের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। যার প্রতিটি ঘর বাবদ ব্যয় হয় ২লক্ষ ৫১ হাজার ৫’শ ৩১ টাকা। গরিবদের মাঝে ১০ টাকা কেজি চাল বিতরণ ইত্যাদি।
এছাড়া, উপজেলার প্রতিটি সড়ক পাকাকরণ ও কার্পেটিং করা হয়েছে। উপজেলার প্রায় সকল বাজার ও সড়কে সৌর বিদ্যুৎ চালিত ল্যাম্প পোষ্ট স্থাপন করেন।
বেনাপোল পৌরসভার কাউন্সিলর কামরুন নাহার আন্না বলেন, শার্শা উপজেলার অনেক উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। পূর্বে এখানকার অনেক গ্রামেই সন্ধ্যার সাথে সাথে মনে হতো ভূতের পল্লী। এখন প্রতিটি গ্রামই আলো ঝলমলে এবং গ্রামগুলো যেন শহর হয়ে গেছে। রাস্তাঘাটগুলো শুকনা মৌসুমের সময় ধুলা আর র্বষার সময় কাঁদাময় বেহাল দশা ছিল। এখন প্রতিটি গ্রামেরই সংযোগ সড়কগুলো পর্যন্ত পাকা হয়েগেছে। যা কিছু হয়েছে তার সবকিছুই হয়েছে শেখ আফিল উদ্দিন এমপির দক্ষ নেতৃত্বের কারণে।
এছাড়া শার্শায় কৃষিখাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এক ফসলি জমিকে দুই ফসলি ও দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি করতে ব্যাপক পরিকল্পনা নেন সাংসদ আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন। শার্শার সোনামুখি ও রুদ্রপুর বিলের জলাশয়কে কৃষির আওতায় আনতে ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নেন। সেখানে খাল খননের মাধ্যমে ১ থেকে ২, ২ থেকে ৩ ফসলের আওতায় আনতে সফল হন তিনি। এখন আর সোনামুখি ও রুদ্রপুর বিলে পানি বদ্ধতা থাকে না। এর ফলে সে এলাকার চাষিরা সুফল পাচ্ছেন গত ৯ বছর ধরে। নিম্নাঞ্চল এখন মৎস খামারে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে এ দু’বিলে অসংখ্য মাছের ঘের প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এখানকার মাছ শার্শার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা মেটাচ্ছে। একই সাথে শার্শার উৎপাদিত মাছ বর্তমানে ভারত সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হচ্ছে। যা থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে দেশ।
এ বিষয়ে শার্শার ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন আহমেদ তোতা বলেন, শার্শা উপজেলায় শেখ আফিল উদ্দিন এমপি যে উন্নয়ন করেছেন তা মুখে বলে বোঝানো যাবেনা। ২০০৯ সালের পুর্বে চিত্র ছিল কি রকম আর এমপি হওয়ার পর কি রকম উন্নয়ন হয়েছে তা না দেখলে বোঝা কষ্টকর। কথা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ সালেহ আহমেদ সাথে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। শার্শার মাটি ও মানুষের নেতা শেখ আফিল উদ্দিন তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার বহু পরে হলেও এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের সুসংগঠিত নের্তৃত্বের কারনে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ১১টি চেয়ারম্যান এবং ১টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। তিনি শার্শায় যে উন্নয়ন করেছেন এগুলো তারই বহিঃপ্রকাশ।
এ বিষয়ে কথা হয় শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জুর সাথে। তিনি বলেন শেখ আফিল উদ্দিন এমপি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে আদর্শিত হয়ে শার্শার সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন। শার্শার উন্নয়ন এখন চোখে পড়ার মত। আশপাশের উপজেলা গুলির চেয়ে শার্শার কল্যানকর উন্নয়ন জনগনের জন্য আসির্বাদে রুপান্তর হয়েছে।
Leave a Reply